আচরণবিধি

ছাত্রদের অবশ্যই পালনীয় নিয়মাবলী

 

  • পরম করুনাময় আল্লাহ তা’আলা সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে সকল কাজ আরম্ভ করবে। স্ব স্ব ধর্মের বিধান মেনে চলবে।

  • মাতা-পিতা, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও বড়দের শ্রদ্ধা করবে এবং সালাম দেবে।

  • সৎ চিন্তা করবে, সৎ পথে চলবে, সত্য কথা বলবে, অন্যায়কে ঘৃণা এবং প্রতিহত করতে চেষ্টা করবে।

  • অধ্যবসায়ী ও পরিশ্রমী হবে। জীবনে সফলতার জন্য আল্লাহ/সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করবে ও তার সাহায্য চাইবে।

  • স্কুল ইউনিফর্ম পরিধান করে নিয়মিত স্কুলে আসবে। স্কুল ইউনিফর্ম ছাড়া কোন অবস্থাতেই শ্রেণি এবং পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।

  • জাতীয় সংগীত, শপথ বাক্য ও মুসলমান ছাত্ররা সূরা ফাতিহা (বাংলা অর্থসহ) শুদ্ধ উচ্চারণে মুখস্ত করবে।

  • বিদ্যালয়ে কোন ছাত্র খেলার যে কোন সরঞ্জাম নিয়ে আসবে না।

  • ক্লাস বসার ১৫ মিনিট পূর্বে স্কুলে আসবে, যথারীতি ‘সমাবেশে’ যোগদান করবে এবং সেখান থেকে সারিবদ্ধভাবে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করবে।

  • শ্রেণির ঘন্টা বাজার পর ৫ মিনিটের মধ্যে যদি কোন শিক্ষক/শিক্ষিকা শ্রেণি কক্ষে না আসেন, তাহলে ‘শ্রেণি মনিটর’ সহকারী প্রধান শিক্ষক/শিক্ষিকা অথবা প্রধান শিক্ষককে অবশ্যই জানাবে।

  • স্কুল চলাকালীন সময়ে টিফিন পিরিয়ড ব্যতীত কোন ছাত্র শ্রেণিকক্ষের বাইরে কোথাও অনুমতি ছাড়া যেতে পারবে না।

  • শ্রেণি কক্ষের ময়লা-আবর্জনা, টিফিনের বর্জ্য ইত্যাদি যত্রতত্র জায়গায় না ফেলে ক্লাসে সংরক্ষিত ঝুড়িতে ফেলবে। মনে রেখো পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ ও ভদ্রতা রুচির পরিচায়ক।

  • টিফিন পিরিয়ডে দিবা শাখার মুসলিম ছাত্ররা জোহরের নামাজ আদায় করবে।

  • টিফিনের পর ওয়ার্নিং বাজার সাথে সাথে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করবে।

  • স্কুলের সম্পদ কেউ নষ্ট করলে উচ্চহারে জরিমানা আদায় করা হবে।

  • খেলাধুলা এবং বিদ্যালয়ের যেকোন অনুষ্ঠানের শান্তি-শৃঙ্খলা-একতা বজায় রেখে অনুষ্ঠানকে সুন্দর ও সফল করতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে।

  • কোন ছাত্র স্কুল পালালে তাকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে।

  • নিয়মিত পড়া শিখে স্কুলে আসবে এবং বাড়ির কাজ করে আনবে।

  • শ্রেণিতে পাঠদান করার সময় মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং বুঝতে চেষ্টা করবে। কোন পাঠ ভাল ভাবে বুঝতে না পারলে আবার বুঝিয়ে দিতে শিক্ষককে অনুরোধ করবে।

  • প্রতি পিরিয়ডে শিক্ষকগণ যে পাঠদান করবেন তা সংক্ষেপে “দৈনিক পাঠের বিবরণী” বইতে লিপিবদ্ধ করবে। বইটি বুঝতে না পারলে শিক্ষকদের সাহায্য প্রার্থনা করবে। বইটির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করবে। বইটি হারালে ৬০/= টাকার বিনিময়ে আবার সংগ্রহ করতে হবে।

  • পরীক্ষার হলে নকল করা, কথা-বার্তা বলা, বই-পত্র বা লেখা কোন কাগজ সঙ্গে আনা নিষেধ। এসব করলে তাকে বহিস্কার করা হবে।

  • ছুটির ঘন্টা বাজার পর শ্রেণিকক্ষের লাইট, ফ্যান বন্ধ করে সকল ছাত্র সারিবদ্ধভাবে নিঃশব্দে শ্রেণিকক্ষ ত্যাগ করবে।

  • স্কুলের দেয়ালে, দরজায়, জানালায় বা ডেস্কে কোন কিছু লিখলে কঠোর শাস্তি পেতে হবে।

  • ছাত্রদের একক বা কোন যৌথ আবেদন লিখিতভাবে শ্রেণি শিক্ষক/শিক্ষিকার মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দিতে হবে।

  • তিন মাসের বেতন একত্রে অন্যান্য পাওনাসহ জানুয়ারী-মার্চ, এপ্রিল-জুন, জুলাই-সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর-ডিসেম্বর মাসের নির্ধারিত দিনে আদায় করা হবে।

  • কোন ছাত্র একই ক্লাসে দু’বার ফেল করলে সরকারি আইন অনুযায়ী সে অত্র বিদ্যালয়ে পড়ার আর কোন সুযোগ পাবে না।

  • কোন ছাত্রের আচার-আচরণে ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে, বিদ্যালয়ের বিধি-বিধান ও শৃঙ্খলা মেনে না চললে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। প্রয়োজনে বিদ্যালয় থেকে টি.সি. প্রদান করা হবে।

  • জরুরী প্রয়োজনে বিদ্যালয়ের শ্রেণি শিক্ষকের নিকট থেকে টেলিফোন/মোবাইল যোগাযোগ/তথ্য জানা যাবে।

  • অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার পর অভিভাবক দিবসে উত্তরপত্র অভিভাবককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে দেখতে হবে এবং শিক্ষকের সাথে কথা বলা যাবে। রেকর্ড যথাযথ সংরক্ষণের নিমিত্তে উত্তরপত্র বাড়িতে দেয়া হবে না।

 

ইউনিফর্মঃ

 

একীভূত শিক্ষার লক্ষ্যে সকল ছাত্রের জন্য অভিন্ন পরিধেয় চালু রয়েছে। সাদা শার্ট, নেভী ব্লু প্যান্ট, সাদা কেডস, সাদা মোজা, ১ ইঞ্চি কালো বেল্ট। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য নেভী ব্লু হাফ প্যান্ট। অন্য সবার জন্য ফুল প্যান্ট। গ্রীষ্মকালে হাফ শার্ট এবং শীতকালে ফুল শার্ট, প্রয়োজনে নেভি ব্লু সোয়েটার। শার্টের পকেটের উপর স্কুলের মনোগ্রাম সহ ব্যাজ লাগানো বাধ্যতামূলক। তাছাড়া প্রথম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সাদা কেডস এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কালো জুতা নির্ধারিত রয়েছে।

 

সম্মানিত অভিভাবক/অভিভাবিকাদের প্রতি পরামর্শঃ

 

  • শ্রেণিকক্ষে “দৈনিক পাঠের বিবরণী” ব্যবহার বাধ্যতামূলক।

  • প্রকৃত অভিভাবক/অভিভাবিকা “দৈনিক পাঠের বিবরণী” বইয়ে নিজের পরিচিত ও নমুনা স্বাক্ষর দেবেন।

  • প্রতিদিন আপনার ছেলে/পোষ্য বিদ্যালয় থেকে বাসার ফেরার পর সেদিন শ্রেণিতে শিক্ষক কোন পিরিয়ডে কি বিষয়ে পড়িয়েছেন তা দেখে ছেলের উপস্থিতি ও পাঠ্যসমূহ সম্বন্ধে নিশ্চিত হউন এবং ঐ দিনের কার্যক্রম বিবরণি পৃষ্ঠার নিচে আপনার জন্য সংরক্ষিত স্থানে মন্তব্যসহ স্বাক্ষর করুন।

  • আপনার ছেলে/পোষ্য ঠিক সময়ে স্কুল ড্রেস পরে স্কুলে আসে কিনা এবং ছুটির পরে বাসায় ঠিক সময়ে ফেরে কিনা এবং কতক্ষণ নিয়মিত লেখাপড়া করে তা লক্ষ্য রাখুন।

  • সাময়িক পরীক্ষাগুলোতে আপনার ছেলে/পোষ্য নিয়মিত উপস্থিত থাকছে কিনা সে দিকে খেয়াল রাখুন এবং ফলাফল জানতে চেষ্টা ও স্বাক্ষর করুন। মোট কার্যদিনের ৯৫% উপস্থিত না থাকলে যৌক্তিক কারণ দর্শানো ছাড়া কোণ ছাত্রকে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেয়া যাবে না।

  • সাময়িক পরীক্ষার প্রত্যেক মার্ক ক্যাটাগরি (রচনামূলক, নৈর্ব্যক্তিক, CA ইত্যাদি) বার্ষিক পরীক্ষার নম্বরের সমন্বয়ে চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারিত হবে।

  • ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত ৮০% লিখিত পরীক্ষা এবং ২০% ধারাবাহিক মূল্যায়ন। পরীক্ষার উভয় অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে।

  • প্রথম থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ১০০ নম্বরের সাময়িক পরীক্ষাকে ৯০ নম্বরে রুপান্তর (Convert) করা হবে এবং শ্রেণি পরীক্ষা ১০ নম্বর।

  • দৈনিক পাঠের বিবরণী বই এর “ছাত্রদের আচরণ-বিধি” অভিভাবক অবশ্যই পাঠ করবেন এবং সে অনুসারে তাকে চলতে নির্দেশ ও সাহায্য করবেন।

  • ছাত্রদের লেখাপড়া ও চারিত্রিক অবস্থা সম্পর্কে জানার জন্য প্রকৃত অভিভাবক অবশ্যই মাঝে মাঝে সহঃপ্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করবেন।

  • ছাত্র সম্পর্কে যে কোন বিষয়ে আলোচনার জন্য পত্র পাওয়ার পর নির্ধারিত দিনে ও সময়ে অভিভাবক শ্রেণি শিক্ষক, সহকারী প্রধানশিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

  • আপনার ছেলে/পোষ্য স্কুলে অনুপস্থিত থাকলে অনুপস্থিতির তারিখ ও কারণ উল্লেখ করে আপনাকেই দরখাস্ত করতে হবে। মনে রাখবেন পর পর তিন দিন বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকলে দরখাস্ত সহ নিজে উপস্থিত হতে হবে।

  • কোন ছাত্র অসুস্থতার কারণে স্কুলে আসতে না পারলে অতি-সত্বর অভিভাবক নিজে একটি আবেদনপত্র চিকিৎসক সার্টিফিকেটসহ প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দিবেন।

  • কোন ছাত্র পরীক্ষায় ফেল করলে অন্য শ্রেণিতে তার ‘প্রমোশনের’ ব্যাপারে কোন প্রকার তদবির করা চলবে না।

  • যে সব অভিভাবক নিজে স্কুলে আনা-নেওয়া করেন, তারা তাদের ছেলে ঠিক সময়ে স্কুলের গেটে পৌছে দেবেন এবং ছুটির পরে ঠিক সময়ে নিয়ে যাবেন, বিদ্যালয় আঙিনায় অবস্থান করবেন না। এতে পরিবেশের ভারসাম্য ও ছাত্রের মনোযোগ নষ্ট হয়।

  • আপনার ছেলে/পোষ্যের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন, খারাপ পরিবেশ ও অসৎ সঙ্গ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।

  • মনে রাখতে হবে অভিভাবক ও শিক্ষক/শিক্ষিকার সম্মিলিত প্রয়াসের ফলে ছাত্রের পাঠোন্নতি ও সুন্দর চরিত্র গঠন সম্ভব।

  • শিক্ষক শিক্ষার্থীর মানস-পিতা এ কথা স্মরণে রেখে স্বীয় সন্তানের পাঠোন্নতি ও চরিত্র গঠনের ব্যাপারে শিক্ষকদের স্বতঃস্ফুর্ত সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন- এটাই একান্ত কাম্য।

  • সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী স্কুল পরিচালিত হয়। এতে আপনার সহযোগিতা কাম্য।

  • সাময়িক পরীক্ষার পর নির্ধারিত অভিভাবক দিবসে শ্রেণিকক্ষে আপনার ছেলের উত্তরপত্র দেখতে পারবেন এবং প্রয়োজনে শিক্ষক/শিক্ষিকাগণের সাথে মত বিনিময় করতে পারবেন। শৃঙ্খলা ও রেকর্ড যথাযথ সংরক্ষণের স্বার্থে উত্তরপত্র বাড়িতে দেওয়া হবে না। কেননা অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে উত্তরপত্র সংরক্ষণ করতে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাঘাত ঘটে।